সিরিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে তুরস্কের আহ্বান
- By Jamini Roy --
- 23 December, 2024
সিরিয়ার বিরুদ্ধে সব ধরনের আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছে তুরস্ক। গতকাল রবিবার (২২ ডিসেম্বর) রাজধানী দামেস্কে সিরিয়ার নতুন নেতা আহমেদ আল শারার সঙ্গে বৈঠক শেষে তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদান এ দাবি জানান। সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা জানায়, এ বৈঠক সিরিয়ার রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
বৈঠকে তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদান এবং সিরিয়ার অন্তর্বর্তীকালীন নেতা আহমেদ আল শারা (আবু মুহাম্মদ আল জোলানি) একাধিক ইস্যু নিয়ে আলোচনা করেন। এসময় শারা কুর্দি বিদ্রোহীদের নিরস্ত্রীকরণ এবং অস্ত্র রাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণে আনার কথা উল্লেখ করেন। তিনি জানান, সিরিয়ার সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে এবং বিদ্রোহী যোদ্ধারা সেনাবাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত হবে।
সংবাদ সম্মেলনে হাকান ফিদান সিরিয়ার ওপর থাকা আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের আহ্বান জানান। তিনি বলেন, "সিরিয়ার পুনর্গঠনে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহযোগিতা এখন জরুরি। নিষেধাজ্ঞা আরোপ রেখে দেশটির উন্নয়ন সম্ভব নয়।"
এদিকে, জাতিসংঘ সিরিয়ার ১৪ বছরের শাসনামলে হওয়া অপরাধ তদন্তে নতুন প্রশাসনের সঙ্গে কাজ শুরু করেছে। একটি প্রতিনিধি দল সিরিয়ার কারাগার, গণকবর এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাগুলো তদন্ত করছে। নতুন নেতৃত্ব জাতিসংঘের এ উদ্যোগে পূর্ণ সহযোগিতা দিচ্ছে বলে জানা গেছে।
এর আগে, ২০ ডিসেম্বর মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের প্রতিনিধিরা আহমেদ আল শারার সঙ্গে বৈঠক করেন। তারা সিরিয়ার রাজনৈতিক পরিবর্তন এবং নতুন প্রশাসনের সঙ্গে কাজের বিষয়ে আলোচনা করেন। বৈঠক শেষে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের শীর্ষ কর্মকর্তা বার্বারা লিফ বলেন, "তাহরির আল শামের প্রধান আহমেদ আল শারার সঙ্গে আমাদের আলোচনা ফলপ্রসূ হয়েছে।"
বার্বারা লিফ আরও জানান, যুক্তরাষ্ট্র সিরিয়ার অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করলেও কোনো গোষ্ঠী যাতে বহির্বিশ্বের জন্য হুমকি হয়ে উঠতে না পারে, সে বিষয়টি নজরে রাখছে। এছাড়া শারার মাথার ওপর থাকা ১ কোটি ডলারের পুরস্কারও প্রত্যাহার করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে শারা কুর্দি বিদ্রোহীদের সতর্ক করে বলেন, "আগামীর সিরিয়ায় গোষ্ঠীগত হুমকির কোনো স্থান থাকবে না।" তিনি দেশটির অস্ত্র ব্যবস্থাপনা একক রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণে আনতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, সিরিয়ায় রাজনৈতিক পরিবর্তন এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহযোগিতার মাধ্যমে একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা হতে পারে। তবে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার এবং বিভিন্ন গোষ্ঠীর মধ্যে ঐক্য স্থাপন এখনো চ্যালেঞ্জ হিসেবে রয়ে গেছে।